২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পাসের আগেই ভয়েস কল ও ডাটাভিত্তিক সব সেবার ওপর গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আদায় শুরু করে সেলফোন অপারেটররা। পরে পাস হওয়া বাজেটে এ শুল্ক কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পাসের আগেই ভয়েস কল ও ডাটাভিত্তিক সব সেবার ওপর গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আদায় শুরু করে সেলফোন অপারেটররা। পরে পাস হওয়া বাজেটে এ শুল্ক কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়।
এটিও পড়ুন জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাবে Twitter
কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনার কারণে প্রায় এক মাস সময়ে কেটে নেয়া অতিরিক্ত ২ শতাংশ শুল্ক ফেরত পাবে না গ্রাহকরা। শীর্ষ সেলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন্স সৈয়দ তালাত কামাল বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে নির্ধারিত সম্পূরক শুল্ক-সংক্রান্ত বিষয়টি বাস্তবায়ন করেছে গ্রামীণফোন।
সেলফোন অপারেটরদের সেবার ওপর গত ৪ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপের কথা উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। একই দিন এ বিষয়ে সংবিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণ আদেশ (এসআরও) জারি করে এনবিআর। ফলে ওইদিন থেকেই পর্যায়ক্রমে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আদায় শুরু করে অপারেটররা। গ্রাহকের ফোন কল ও ডাটাভিত্তিক সেবার ওপর এ শুল্ক আদায় করা হয়। এর সঙ্গে আগের ১৫ শতাংশ মূল্যসংযোজন কর (মূসক) যুক্ত করা হয়। ফলে প্রতি মিনিট কল কিংবা ইন্টারনেট সেবায় আগের চেয়ে বাড়তি বিল গুনতে হয় গ্রাহকদের।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, সেলফোন সেবায় ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক কমিয়ে ৩ শতাংশ হারে আরোপের বিধান রেখে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পাস করা হয়। এ বিষয়ে ১ জুলাই এসআরও জারি করে এনবিআর। ফলে অপারেটররাও ৩ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক কাটা শুরু করে। তবে আগের আদায় করা অতিরিক্ত ২ শতাংশ গ্রাহকদের ফেরত দিতে হচ্ছে না তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থমন্ত্রী গত ৪ জুন বাজেট ঘোষণায় সেলফোন সেবার ওপর ৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপের যে প্রস্তাব করেছিলেন, তা ওইদিন থেকেই কার্যকর করা হয়েছিল। ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়া পর্যন্ত সে হারেই এ শুল্ক আহরণ করেছে অপারেটররা। আর চূড়ান্ত বাজেটে এ শুল্ক ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব পাস হয়েছে। বাজেট পাসের পর থেকে এ হারেই শুল্ক কর্তন করবে অপারেটরা। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আর ৪ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৩ শতাংশের অতিরিক্ত যে শুল্ক কর্তন করা হয়েছে, তা গ্রাহকদের ফেরত দেয়া হবে। এ অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে।
এটিও পড়ুন grameenphone এর সকল service বন্ধ করার কোডগুলো জেনে নিন
নতুন এ শুল্ক আরোপের ফলে ভয়েসভিত্তিক সেবার পাশাপাশি ডাটাভিত্তিক সেবার মূল্যও বেড়েছে। এতে দেশে ইন্টারনেট সেবার প্রবৃদ্ধিতে অন্তরায় হিসেবে দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা আশঙ্কা করছেন, নতুন শুল্ক আরোপের ফলে ভয়েস ও ডাটা ব্যবহারে ব্যয় বাড়বে গ্রাহকের। অতিরিক্ত এ শুল্ক আরোপের ফলে ভয়েস কলের পাশাপাশি ডাটাভিত্তিক সেবার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সরকার ইন্টারনেট সেবার প্রসারে যেসব উদ্যোগ নিয়েছে, তা এর ফলে বাধাগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, মে মাস শেষে দেশে সেলফোন গ্রাহক ১২ কোটি ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৫ কোটি ২৮ লাখ ৩৯ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ২১ লাখ, রবি আজিয়াটার ২ কোটি ৭১ লাখ ৪৪ হাজার, এয়ারটেলের ৮৫ লাখ ১৬ হাজার, টেলিটকের ৪১ লাখ ৬১ হাজার ও সিটিসেলের ১২ লাখ ৭ হাজার। অন্যদিকে একই সময়ে দেশে ইন্টারনেট সংযোগ সংখ্যা ৪ কোটি ৭৪ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু সেলফোন অপারেটরদের ইন্টারনেট সেবার সংযোগ সংখ্যা ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৭৩ হাজার।
No comments:
Leave A Comment
আমাদের পোস্টগুলি ভালো লাগলে কমেন্ট করে আমাদের উৎসাহ দিন